Class X Geography short question

অ্যালবেডো কাকে বলে ?
সূর্যকিরণ থেকে পৃথিবীতে মোট যে পরিমাণ তাপ আসে তার ৩৪% তাপ মেঘপুঞ্জ, ধুলিকণা প্রভৃতি দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায়। পৃথিবী থেকে সূর্যরশ্মির  প্রত্যাবর্তনের এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে অ্যালবেডো বলে । পৃথিবীর গড় অ্যালবেডো হল ৩৪% । সূর্যরশ্মির তাপীয় ফলের শতকরা ৩৪ ভাগ (২ ভাগ ভূপৃষ্ঠ থেকে, ৭ ভাগ বায়ুমন্ডল থেকে এবং শতকরা ২৫ ভাগ মেঘপুঞ্জ থেকে) মহাশূন্যে প্রতিফলিত ও বিচ্ছুরিত হয়ে ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে আবার মহাশূন্যে ফিরে যায়, ফলে এরা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারে না। একেই পৃথিবীর অ্যালবেডো বলে।

প্রশ্ন:- তাপমাত্রার স্বাভাবিক হ্রাস বলতে কী বোঝ ?  অথবা, স্বাভাবিক তাপ হ্রাসের হার কাকে বলে ?
সাধারণ প্রতি ১ কিলোমিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ৬.৪ সেলসিয়াস (অথবা প্রতি ৩০০ ফুটে ১ ফারেনহাইট) হারে উষ্ণতা কমে যায়, একে ‘উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার’ বা ‘উষ্ণতা হ্রাসের গড়’ বলে । তবে উষ্ণতা কমে যাওয়ার পরিমাণ সব সময় সমান হয় না, দিন-রাত্রিতে এবং ঋতুভেদেও এর পার্থক্য হয় ।

প্রশ্ন:-  বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুর চাপের সম্পর্ক কী ?
বায়ুমন্ডলের উষ্ণতার ওপর বায়ুচাপ সম্পূর্ণ ভাবে নীর্ভরশীল। বায়ূর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ূর চাপ বিপরীত অনুপাতে পরিবর্তিত হয় –অর্থাৎ বায়ুর উষ্ণতা কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে এবং উষ্ণতা কমলে বায়ুর চাপ কমে। সুতরাং ,কোনো স্থানে বায়ুর চাপ (সমানুপাতিক) ১/সেইস্থানের বায়ুর তাপমাত্রা (অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে)।

প্রশ্ন:- বর্ষাকালে শীতকালের তুলনায় বায়ুর চাপ কম হয় কেন ?
জলীয় বাষ্প বিশুদ্ধ বায়ুর তুলনায় হালকা । সেই জন্য জলীয় বাষ্পপূর্ণ আদ্র বায়ু জলীয় বাষ্পহীন শুষ্ক বায়ুর তুলনায় হালকা এবং শুষ্ক বায়ুর চাপও অপেক্ষাকৃত কম । এই জন্য বর্ষাকালে জলীয় বাষ্পপূর্ণ আদ্র বায়ুর চাপ শীতকালের শুষ্ক বায়ুর তুলনায় কম হয় ।

প্রশ্ন:- উত্তর গোলার্ধের উচ্চভূমির দক্ষিণ ঢালের উত্তাপ উত্তর ঢাল অপেক্ষা বেশি হয় কেন ?
উত্তর গোলার্ধের উচ্চভূমির দক্ষিণ ঢালে সূর্যরশ্মি অপেক্ষাকৃত লম্বভাবে পড়ার ফলে দক্ষিণ ঢালের উষ্ণতা উত্তর ঢালের উষ্ণতার তুলনায় বেশি হয় । উত্তর ঢালে সূর্যরশ্মি অপেক্ষাকৃত তির্যকভাবে পড়ে বলে উত্তর ঢাল কম উষ্ণ হয় ।

প্রশ্ন:- উষ্ণতা হ্রাসের গড় (Lapse rate) কাকে বলে ?  উদাহরণ সহ লেখ।
সাধারণত প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ৬.৪ সেলসিয়াস (অথবা প্রতি ৩০০ ফুটে ১ফারেনহাইট) হারে বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা কমে যায়, একে ‘উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার’ বা  “উষ্ণতা  হ্রাসের গড়” বলে ।
উষ্ণতা কমে যাওয়ার পরিমাণ সব সময়ে সমান হয় না, দিন-রাত্রিতে এবং ঋতুভেদেও উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হারের তারতম্য হয় ।
উদাহরণঃ শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং-এর দুরত্ব বেশি নয়, কিন্তু যেহেতু দার্জিলিং শিলিগুড়ি থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত, সেই জন্য দার্জিলিং-এর তাপমাত্রা সবময়েই শিলিগুড়ি থেকে অনেক কম হয়।

প্রশ্ন:- উষ্ণমণ্ডল সৃষ্টির কারণ উল্লেখ করো।
১) নিরক্ষরেখার উত্তর ও দক্ষিণ উভয় দিকে কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখাদ্বয়ের মধ্যবর্তী অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা সারাবছর ধরেই বেশি থাকে (২৭ সেলসিয়াস) ।
২) এই অঞ্চলে সারাবছরে দিনের দৈর্ঘের বিশেষ পার্থক্য হয় না এবং প্রত্যেক স্থানে সূর্যরশ্মি বছরের অন্তত দুদিন মধ্যাহ্নে লম্বভাবে পড়ে । লম্বভাবে পতিত রশ্মির উষ্ণতা অনেক বেশি হওয়ায় এই অঞ্চলের তাপমাত্রা পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় (যেখানে তির্যকভাবে সূর্যরশ্মি পড়ে) অনেক বেশি হয় ।
৩) এই অঞ্চলে শীত ঋতুর আবির্ভাব হয়না বললেই চলে ।
এই সব কারণে নিরক্ষরেখার উভয়দিকে ২৩½ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে উষ্ণমণ্ডলের সৃষ্টি হয়েছে ।

প্রশ্ন:-  নিরক্ষরেখা থেকে একটি দ্রাঘিমা রেখা বরাবর মেরুপ্রদেশ পর্যন্ত গেলে জলবায়ুর পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করা যায় কেন ?
নিরক্ষরেখা থেকে একটি দ্রাঘিমা বরাবর মেরু অঞ্চল পর্যন্ত গেলে অক্ষাংশ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা ক্রমশ কমতে থাকে, কারণ,  উষ্ণতা হল আবহাওয়া ও জলবায়ুর অন্যতম প্রধান উপাদান । জলবায়ুর অন্য সব উপাদান উষ্ণতার ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করে । অক্ষাংশের পরিবর্তন হলে উষ্ণতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাই জলবায়ুরও পরিবর্তন হয় ।
নিরক্ষরেখা থেকে একটি দ্রাঘিমারেখা বরাবর মেরু অঞ্চল পর্যন্ত গেলে প্রথমে উষ্ণমন্ডলের উষ্ণ জলবায়ু এবং তার পর নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলের মৃদুভাবাপন্ন জলবায়ু এবং তারপরে হিমমণ্ডলের অতি শীতল জলবায়ু দেখা যাবে ।

প্রশ্ন:- পৃথিবীর বিভিন্ন বায়ুচাপ বলয়ের সীমা পরিবর্তনের কারণ ও প্রভাব কী কী ?
সূর্যের উত্তরায়ণ (উত্তরমুখী আপাত গতি) ও দক্ষিণায়ণ (দক্ষিণমুখী আপাত গতি)-এর ফলে ভূপৃষ্ঠের তাপবলয় ও বায়ুচাপবলয়গুলো কিছুটা স্থান পরিবর্তন করে । যেমন সূর্যের উত্তরায়ণের সময় পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয়গুলি ৫ -১০ উত্তরে সরে যায় এবং দক্ষিণায়ণের সময় এরা ৫ -১৫ দক্ষিণে সরা যায় । এই ঘটনাকেই বায়ুচাপ বলয়ের সীমানা পরিবর্তন বলা হয়।
প্রভাব:
১) বায়ুচাপ বলয়ের সীমানা পরিবর্তনের ফলে নিয়তবায়ুপ্রবাহেরও পরিবর্তন ঘটে ।
২) বায়ু বলয়গুলির সঙ্গে বৃষ্টি বলয়গুলিও সরে যায় । গ্রীষ্মে আয়নবায়ুর প্রবাহ উত্তরে সরে গেলে সাভানা অঞ্চলে বৃষ্টি হয়, কিন্তু শীতে এই বায়ুপ্রবাহ দক্ষিণে সরে গেলে এর প্রভাবে সেখানে কোনও বৃষ্টিপাত হয় না ।
৩) গ্রীষ্মকালে ৩০ -৪০ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী বায়ুচাপ বলয়গুলি সামান্য উত্তরে সরে যাওয়ায় এই অঞ্চল শুষ্ক আয়ন বায়ুর প্রভাবে আসে । আবার শীতকালে এই অঞ্চলের বায়ুচাপবলয়গুলি সামান্য দক্ষিণে সরে যাওয়ায় এই অঞ্চলে আদ্র পশ্চিমাবায়ুর প্রভাব দেখা যায় । এইজন্য ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টিপাত হলেও গ্রীষ্মকালে সাধারণত বৃষ্টিপাত হয় না ।

প্রশ্ন:- থর মরুভূমিতে শীত ও গ্রীষ্মের পার্থক্য খুব বেশি কেন ?
নিম্নলিখিত কারণগুলির জন্য মরুভূমি অঞ্চলে শীত ও গ্রীষ্মের উষ্ণতার পার্থক্য বেশি হয়ঃ
১) মরু অঞ্চলে ভূমিতে বালুকণার পরিমাণ বেশি থাকে । এছাড়া এই বালুকণার মধ্যে কোয়ার্টজ নামে এক ধরনের খনিজ পদার্থ থাকে । তাপ ধরে রাখতে পারে না বলে এরা দ্রুত উত্তপ্ত এবং দ্রুত শীতল হয় । এর ফলে মরুভূমি অঞ্চলে শীত ও গ্রীষ্মের উষ্ণতার পার্থক্য খুব বেশি হয় ।
২) মরু ঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম হওয়ার ফলে এখানে চরম প্রকৃতির আবহাওয়া দেখা যায় ।
৩) মরু ঞ্চলের বালুকাময় মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতা নেই বললেই চলে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চলে উত্তাপ যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়, আবার শীতকালের উষ্ণতা যথেষ্ট হ্রাস পায় ।

প্রশ্ন:-  আবহাওয়া ও জলবায়ুর পার্থক্য লেখো ।
কোনো নির্দিষ্ট স্থানের নির্দিষ্ট সময়ে বায়ুমণ্ডলে কতগুলো পরিবর্তনশীল উপাদানের অবস্থাকে আবহাওয়া বলা হয় । অন্য দিকে, একটি বিশাল অঞ্চলের আবহাওয়ার দৈনন্দিন অবস্থার বহুদিনের অন্তত ৩৫ বছরের গড় বিবরণকে সেই অঞ্চলের জলবায়ু বলা হয়।
আবহাওয়া ও জলবায়ুর পার্থক্যঃ
আবহাওয়া
জলবায়ু
১) আবহাওয়া হল কোনো স্থানের ১ দিনের অথবা কয়েক ঘন্টার অবস্থা।
১) জলবায়ু হল কোনো স্থানের আবহাওয়ার উপাদানগুলোর অন্তত ৩৫ বছরের গড় অবস্থা ।
২) কোনো স্থানের আবহাওয়া প্রায় প্রত্যেক দিনেই পরিবর্তিত হয়।
২) কোনো স্থানের জলবায়ু প্রত্যেক দিনের ব্যবধানে পরিবর্তিত হয় না ।
৩) আবহাওয়া কোনো স্বল্প পরিসর স্থানের বায়ুমণ্ডলের সাময়িক অবস্থা সূচিত করে ।
৩) জলবায়ু কোনো বিস্তৃত অঞ্চলের বায়ূমণ্ডলের দীর্ঘকালীন গড় অবস্থা নির্দেশ করে ।

প্রশ্ন:-  মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি উষ্ণ হয় কেন ? অথবা, মেঘমুক্ত রাত্রি থেকে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি বেশি উত্তপ্ত হয় কেন ?
বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরের তুলনায়, নীচের স্তরের বায়ুর মধ্যে ধূলিকণা এবং জলীয় বাষ্প বেশি থাকে বলে বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরের বায়ুর চেয়ে নীচের স্তরের বায়ুর তাপ গ্রহণ এবং তাপ সংরক্ষণ ক্ষমতা বেশি হয় । এজন্য মেঘাচ্ছন্ন রাত্রিতে ভূপৃষ্ঠ যে তাপ বিকিরণ করে তা মেঘের দ্বারা বাধপ্রাপ্ত হয় এবং খুব বেশি উপরে না উঠতে পেরে গ্রিন হাউস এফেক্ট প্রক্রিয়ায় তা বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরকে উত্তপ্ত করে । এর ফলে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি উত্তপ্ত হয় । অপরপক্ষে, মেঘমুক্ত রাত্রিতে ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপ অনেক ওপরে উঠতে পারে, তাই মেঘমুক্ত রাত্রিতে মেঘাচ্ছন্ন রাতের তুলনায় বেশি শীত লাগে ।

প্রশ্ন:- লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মির তুলনায় তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয় কেন ?
তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মির তুলনায় অনেক বেশি পথ অতিক্রম করে ভূ-পৃষ্ঠে পৌঁছায় এবং বেশি স্থান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে । ফলে তির্যক ভাবে পতিত রশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয় ।
কিন্তু লম্বভাবে পতিত রশ্মি অপেক্ষাকৃত কম পথ অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছায় এবং অপেক্ষাকৃত কম স্থান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে লম্বভাবে পতিত রশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ বেশি হয় ।

প্রশ্ন:- ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে বায়ুর চাপ ক্রমশ কমে কেন ?
ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে বায়ুর চাপ ক্রমশ কমে যায়, কারণঃ ১) ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুস্তরের ঘনত্ব কমতে থাকে । সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুস্তরের ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ১,২০০ গ্রাম, অথচ ভূপৃষ্ঠের ৫ কিমি ঊর্ধ্বে বায়ুর ঘনত্ব সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় অর্ধেক কমে যায় । ঘনত্ব কমলে স্বাভাবিক ভাবেই বায়ুর ওজন কমে যায় এবং ওজন কমলে বায়ুর চাপও কম হয় । ২) ভূপৃষ্ঠের ওপরের দিকে বায়ুস্তরের গভীরতা কম হওয়ার ফলে বায়ুতে অণুর পরিমাণ কম থাকায় বায়ুচাপ কম হয় । প্রতি ১১০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ূর চাপ ১ সেন্টিমিটার হারে কমে যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের বায়ুচাপকে যদি ১০০% ধরা হয়, তা হলে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুর চাপ মাত্র ১% হয়ে যায় ।

প্রশ্ন:-  দিনের বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীতে তাপের তারতম্য হয় কেন ?
সকালে এবং বিকালে কোনো স্থান থেকে সূর্য অনেক দূরে থাকে বলে সূর্যরশ্মিঃ ১) পৃথিবী পৃষ্ঠের সেই স্থানে তুলনামূলক ভাবে বেশি তির্যকভাবে পড়ে, ২) বেশি পরিমাণ বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং ৩) বেশি স্থান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে । এজন্য সকাল এবং বিকালে আমরা সূর্য থেকে কম তাপ পাই ।
অন্যদিকে, দুপুরে সূর্যরশ্মি ১) পৃথিবীপৃষ্ঠের কোনো স্থানে লম্বভাবে পড়ে,  ২) অল্প বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং ৩) অল্প স্থান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বলে আমরা তুলনা মূলক ভাবে বেশি উত্তাপ পাই ।
দুপুরে তুলনামূলকভাবে বেশি তাপ পাওয়ার আরও একটি প্রধান কারণ হল যে, বেলা ২ টো পর্যন্ত ভূপৃষ্ঠের তাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে, কিন্তু এই সময়ের পর থেকে ভূপৃষ্ঠ যে পরিমাণ তাপ গ্রহণ করে সেই পরিমাণ তাপ বিকিরণ করে বলে সঞ্চিত তাপ তখন বাড়ে না । এজন্য কোনো স্থানে বেলা ২ টোয় দিনের মধ্যে সর্বাধিক তাপ অনুভূত হয়।

প্রশ্ন:- উষ্ণতার তারতম্যে বায়ুচাপের তারতম্য ঘটে কেন ?
তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বায়ু প্রসারিত হয় এবং আয়তনে বেড়ে যায় । আয়তনে বেড়ে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায়- অর্থাৎ বায়ু উষ্ণ হলে বায়ুর চাপ কমে । নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ু উষ্ণ হওয়ায় এই অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । একইভাবে বায়ুর উষ্ণতা কমে গেলে বায়ু সংকুচিত হয় এবং বায়ুর চাপ বেড়ে যায় । এই জন্য প্রচন্ড ঠান্ডার জন্য দুই মেরু অঞ্চলে বায়ুচাপও বেশি হয় । সুতরাং বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ূচাপের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে । বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুর চাপ ‘বিপরীত অনুপাতে’  পরিবর্তিত হয়, অর্থাৎ, উষ্ণতা কমলে বায়ুচাপ বাড়ে এবং উষ্ণতা বাড়লে বায়ুচাপ কমে ।

প্রশ্ন:- শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং-এর তাপমাত্রা কম কেন ?
স্বাভাবিক অবস্থায় উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাস পায় । বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাসের হার হল প্রতি ১ কিলোমিটারে ৬.৪ সেলসিয়াস। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের দূরত্ব বেশি নয়, কিন্তু যেহেতু দার্জিলিং-এর উচ্চতা শিলিগুড়ির তুলনায় অনেক বেশি সেই হেতু দার্জিলিং-এর তাপমাত্রা সবসময়েই শিলিগুড়ির তাপমাত্রার তুলনায় অনেক কম হয় ।

প্রশ্ন:- ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ এবং ল্যাব্রাডর উপকূল একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে বরফ জমে না, অথচ ল্যাব্রাডর উপকূলে বরফ জমে, এর কারণ কী ?
ব্রিটিশ দ্বীপপূঞ্জ ও ল্যাব্রাডর উপকূল একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও ব্রিটিশ দ্বীপপূঞ্জের পাশ দিয়ে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত প্রবাহিত হয়, তাই ব্রিটিশ দ্বীপপূঞ্জের বায়ুমণ্ডল উষ্ণ হওয়ায় নিকটস্থ সমুদ্রে বরফ জমে না । কিন্তু ল্যাব্রাডর উপকূলের পাশ দিয়ে হিমমণ্ডল থেকে আসা অতি শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত প্রবাহিত হয় বলে ল্যাব্রাডর উপকূলের বায়ুমন্ডলে তাপমাত্রা কম থাকায় ওই উপকূলে বরফ জমে ।
Mr. Subhendu Biswas
B.sc(H)Geo,M.sc(geo)
info.subhendu@gmail.com
+ 91 9933669847